TOURISM

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র

প্রবেশ পথেই চোখে পড়বে আলুটিঐশ্বর্যময় সৌন্দর্য্যের অহঙ্কার খাগড়াছড়ি শহরের লা পর্যটন কেন্দ্র। আলুটিলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম ব্যতিক্রমধর্মী পর্যটন স্পট।




 এ পর্যটন কেন্দ্রে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, বিশ্রাম কক্ষ ও বসার সু-ব্যবস্থাসহ গুহায় যাওয়ার পথে সিঁড়ি করা হয়েছে। এ টিলার চূড়ায় দাঁড়ালে শহরের ছোট-খাট ভবন, বৃক্ষ শোভিত পাহাড়, চেঙ্গী নদীর প্রবাহ ও আকাশের আল্পনা মনকে অপার্থিব মুগ্ধতায় ভরে তোলে। প্রাকৃতিক নৈসর্গের এ স্থানটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে সরকার এখানে ইকোপার্ক স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।



পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে খাগড়াছড়িকে দেখে দার্জিলিংয়ের সাথে তুলনা করতে পারেন। প্রতিদিন শত শত পর্যটক এখানে বনভোজন করতে কিংবা অবসরে বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য এ স্থানে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পও আছে.






আলুটিলার সুড়ঙ্গ বা রহস্যময় সুড়ঙ্গ

গা ছমছম করা অনুভূতি নিয়ে পাহাড়ী সুড়ঙ্গ পথ বেয়ে অন্ধকার পাতালে নেমে যাওয়া কল্পনার বিষয় হলেও আলুটিলার সুড়ঙ্গ পথ কল্পনার কিছু নয়। আলুটিলা কেন্দ্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর ‘রহস্যময় সুড়ঙ্গ’। স্থানীয় লোকের ভাষায় ‘‘মাতাই হাকর’’ যার বাংলা অর্থ দেবগুহা।
এ পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ির নীচে আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশে পাথর আর শিলা মাটির ভাঁজে গড়া এ রহস্যময় সুড়ঙ্গের অবস্থান। গুহামুখের ব্যাস প্রায় ১৮ফুট আর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮০ফুট। প্রবেশমুখ ও শেষের অংশ আলো-আঁধারিতে আচ্ছন্ন। মাঝখানে নিকষ কালো গাঢ় অন্ধকার এ গুহার তলদেশ দিয়ে প্রবাহমান শীতল জলের ঝর্ণাধারা। গা ছমছম করা অনুভূতি নিয়ে এ গুহায় প্রবেশ করাটা একদিকে যেমন ভয়সংকুল তেমনি রোমাঞ্চকরও বটে।


 শুধু বাংলাদেশেতো বটেই পৃথিরীর অন্য কোন দেশেও এ রকম প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ পথের খুব একটা নজীর নেই। অনন্য সাধারণ এ গুহায় মশাল বা উজ্জ্বল টর্চের আলো ব্যতীত প্রবেশ করা যায় না। মশাল পর্যটন কেন্দ্রেই পাওয়া যায় ১০টাকার বিনিময়ে। গুহার একদিকে ঢুকে অন্যদিকে গিয়ে বেরোতে সময় লাগে মাত্র ১৫/২০মিনিট। উপমহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক এ সুড়ঙ্গ জেলার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।





আলুটিলার ঝর্ণা বা রিছাং ঝর্ণা

 মারমা ভাষায় এর নাম রিছাং ঝর্ণা, ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি আর ‘ছাং’ শব্দের অর্থ গড়িয়ে পড়া ,জেলা সদর থেকে আলুটিলা পেরিয়ে সামান্য পশ্চিমে মূল রাস্তা থেকে উত্তরে ঝর্ণা স্থানের দূরত্ব সাকুল্যে প্রায় ১১কিঃ মিঃ। ঝর্ণার সমগ্র যাত্রা পথটাই দারুণ রোমাঞ্চকর।
যাত্রাপথে দূরের উঁচু-নীচু সবুজ পাহাড়, বুনোঝোঁপ, নামহীন রঙ্গীন বুনোফুলের নয়নাভিরাম অফুরন্ত সৌন্দর্য্য যে কাউকে এক কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যায়।ঝর্ণার কাছে গেলে এক পবিত্র স্নিগ্ধতায় দেহমন ভরে উঠে। ২৫-৩০ হাত উঁচু পাহাড় থেকে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার জলরাশি, ঢালু পাহাড় গড়িয়ে নীচে মেমে যাচ্ছে এই প্রবাহ।

কাছাকাছি দুটো ঝর্ণা রয়েছে এ স্থানে, প্রতিদিন বহু সংখ্যক পর্যটক এখানে এসে ভীড় জমান এবং ঝর্ণার শীতল পানিতে গা ভিজিয়ে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হন।। মূল সড়ক হতে রিছাং ঝর্ণায় যাওয়ার পথে চারিদিকের পাহাড়ী প্রকৃতি মনের মাঝে এক অনুপম অনুভূতির সৃষ্টি করে। ইচ্ছে করে প্রকৃতির মাঝেই কাটিয়ে দিই সারাক্ষণ। ঝর্ণা ছেড়ে মন চায় না ফিরে আসতে কোলাহল মূখর জনারণ্যে।





দেবতার পুকুর 

সদর উপজেলার নূনছড়ি মৌজায় আলুটিলা পর্বত শ্রেণী হতে সৃষ্ট ছড়া নূনছড়ি। নূনছড়ি ছড়ার ক্ষীণ স্রোতের মাঝে রয়েছে প্রকান্ড সব পাথর। স্বচ্ছ জলস্রোতে স্থির পাথর মোহিত করে, প্রকৃতির অপূর্ব সাজে মুগ্ধতায় শিহরিত হয় মন। সমুদ্র সমতল হতে প্রায় ১০০০ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় দেবতার পুকুর রূপকথার দেবতার আর্শীবাদের মতো সলিল বারির স্রোতহীন সঞ্চার। এ পুকুরটির স্বচ্ছ জলরাশির মন ভোলানো প্রশান্তি মূহুর্তের মাঝে পর্যটকদের হৃদয় মন উদাস করে দেয়। এত উঁচু পাহাড় চূড়ায় পুকুরটি নানা রহস্যে ভরপুর। এ পুকুর ত্রিপুরাদের তীর্থক্ষেত্র  হিসেবে পরিগণিত।
প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তিতে এখানে তীর্থ মেলা বসে এবং তান্ত্রিক বিধানমতে ত্রিপুরাগণ যাগযজ্ঞাদি করে। ত্রিপুরাদের ভাষায় দেবতার পুকুরের নাম মাতাই পুখির। মাতাই অর্থ দেবতা আর পুখির অর্থ পুকুর। পুকুরের চতুর্দিকে ঘন বন দেখে মনে হয় যেন সৌন্দর্য্যের দেবতা স্বয়ংবর নিয়ে দাঁড়িয়ে। কথিত আছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জল তৃষ্ণা নিবারণের জন্য জল দেবতা স্বয়ং এ পুকুর খনন করেন। পুকুরের পানিকে স্থানীয় লোকজন দেবতার আশীর্বাদ বলে মনে করেন। প্রচলিত আছে যে, এ পুকুরের পানি কখনো কমে না। আরও একটি গল্প প্রচলিত আছে যে, এই পুকুর কোন দেবতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং পুকুরের তলায় বহু গুপ্তধন লুকায়িত আছে যা দেবতারা পাহাড়া দিচ্ছে। অনেকের ধারণা এখানে এসে কিছু চাইলে তা পূরণ হয়। এ এলাকাটি ত্রিপুরা অধ্যুষিত কথিত আছে বর্তমান দেবতা পুকুর এলাকা এক সময় উঁচু পাহাড়ী অঞ্চল ছিল। এ উঁচু পাহাড়ের পাশে দু’টো জনবসাতি ছিল। এ জনবসতির এ জুমিয়া এক সময় ঐ পাহাড়ে জুম চাষ করত। জুম চাষ করার এক পর্যায়ে ঐ পাহাড়টা আবাদ না করার জন্য তাকে স্বপ্নে বারণ করা হয়। কিন্তু স্বপ্নের গুরুত্ব না দিয়ে এমনকি বারবার একইভাবে স্বপ্নে নিষেধ করা সত্বেও সে যথারীতি জুম চাষ চালিয়ে যায়। শেষবারে তাকে নরবলী দিয়ে জুমের ফসল ভোগের জন্য বলা হয় এবং তা করলে সে আরো কিছু ধন লাভ করবে বলেও স্বপ্নে জানানো হয়। কিন্তু এ দাবী পূরণে জুয়িার বিশ্বাস এবং সামথ্য কোনটাই ছিল না। এর কিছুদিন পর এক অমাবশ্যার রাতে ঐ স্থানে এক প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে আশে-পাশের লোকেরা দেখতে পায় জুমের জায়গায় পাহাড়ের উপরে বিরাট এক জলাশয়। এ জলাশয়ই ‘দেবতা পুকুর’ নামে পরিচিত।
এ দেবতা পুকুর বর্ষাকালে পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং বছরের কোন সময়ে শুকিয়ে যায় না। পুকুরের চারিদিক সুবিস্তৃত পর্বতশ্রেণী। তারই মাঝে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বিভাবে প্রায় ১০০০ফুটের উপর এর অবস্থান। পুকুরের আকার দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫০০ফুট এবং প্রস্থে প্রায় ৬০০ফুট।



শান্তিপুর অরণ্য কুটির


খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম সৌন্দর্য-মন্ডিত এলাকা পানছড়ি উপজেলা। এ উপজেলার শান্তিপুর নামক স্থানে ইংরেজী ১৯৯৯ সনে শান্তিপুর অরণ্য কুটির স্থাপিত হয়েছিল। বিশাল এলাকাজুড়ে অরণ্যে আবৃত বলেই হয়তো এর নামকরণ হয়েছে অরণ্য কুটির। নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে ধ্যান সাধনার জন্য ভিক্ষুরা এই কুটিরটি ব্যবহার করেন বলে জনশ্রুতি আছে। এটি মূলতঃ বৌদ্ধ মন্দির। এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হল এখানেই বাংলাদেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বুদ্ধ মূর্তিটি রয়েছে। যার উচ্চতা ৪২ফুট।
প্রতিদিন বহু পর্যটক মূর্তিটি দেখতে ভিড় জমান এই কুটিরে।ইহা একটি হিংসা-বিদ্বেষবিহীন মৈত্রীপূর্ণ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি দর্শন করার ক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত। বর্তমানে ইহা একটি তীর্থস্থান এবং অন্যদিকে একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে ২৫টিরও বেশী পর্ণ কুটির রয়েছে এবং উপ-কুটিরও রয়েছে। প্রত্যাকটি কুটিরে ও উপকুটিরে একজন করে ভিক্ষু ও শ্রামণ অবস্থান করে ভাবনা ও ধ্যানে মগ্ন থাকেন। বর্তমানে ভিক্ষু শ্রামণসহ ৪০জন অবস্থান করছেন। শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে সাড়ে ৪৮ফুট উচ্চতার গৌতম বুদ্ধের মূর্তি, লাভীশ্রেষ্ঠ সিবলী মহাস্থবিরের মন্দিরসহ মূর্তি, মারবিজয়ী উপগুপ্ত মহাস্থবিরের মূর্তি, অধ্যক্ষ মহোদয়ের আবাসস্থল ‘‘মৈত্রী ভবন’’, ১০০ হাত দৈর্ঘ্যের ভিক্ষুশালা, ৬০ হাত দৈর্ঘ্যের দেশনাঘর, ৮০ হাত দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট ভোজনশালা এবং বড় বুদ্ধ মূর্তির ছাদ।
এ সমস্ত স্থাপনাগুলো বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তা, বিভিন্ন এলাকার ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দাতা ব্যক্তিদের আর্থিক সাহায্য এবং এলাকাবাসীর কায়িক, মানসিক ও আন্তরিক সহযোগিতার ফলে গড়ে উঠেছে। একদিকে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা এবং অন্যদিকে কুটিরের আয়ের উৎস হিসেবে খালি জায়গায় চারা রোপণ করে বাগান সৃজন করা হয়েছে।এ পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে সাম্য ও মৈত্রীর প্রভাবে এলাকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক পারস্পরিক সম্প্রীতি পোষণ করে শান্তিতে বসবাস করছেন এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়েছে। প্রতি বছর বৌদ্ধ ধর্মের শ্রেষ্ঠ দান কঠিন চীবর দান যথাযথভাবে উদ্যাপন করা হয় এবং উক্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে।



বিডিআর স্মৃতিসৌধ
বর্তমান বাংলাদেশ রাইফেলস্ এর গোড়াপত্তন হয় রামগড়ে। বাংলাদেশ রাইফেলস্ এর ইতিহাস নিম্নরূপঃ
রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন (১৭৮৯৫-১৮৬০)ঃ ১৭৯৫ সালের ২৯শে জুন রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন নামে সৃষ্টি হয় এ বাহিনী। যার সৈন্য সংখ্যা ছিলো মাত্র ৪৪৮জন। সীমান্ত সমস্যা বৃদ্ধি পেলে এ বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের দীর্ঘকালীন অভিযানে অংশগ্রহণ করে। ৬পাউন্ড গোলার ৪টি কামান ও দু’টি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে গঠিত হয় সেদিনের রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন।

ফ্রন্টিয়ার গার্ডস (১৮৬১-১৮৯০)ঃ ১৮৬১ সালে পূর্বাঞ্চলের নিয়মিত ও অনিয়মিত পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন পুনর্গঠিত হয়। যার নামকরণ করা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস। সদস্য সংখ্যা ছিলো ১৪৫৮জন এবং সদর দপ্তর ছিলো চট্টগ্রামে। যার মধ্যে কামরূপ, গোয়ালপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিলেট ও ত্রিপুরার সীমান্ত ফাঁড়িগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিলো। ১৮৭৯ সালে স্পেশাল রিজার্ভ কোম্পানির নামে এ বাহিনীর তৎকালীন সদস্যগণকে নিয়ে পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। সে থেকে অদ্যাবধি পিলখানায় রাইফেলস সদস্যদের কর্মকান্ড অব্যাহত আছে।
বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশ (১৮৯১-১৯১৯)ঃ ১৮৯১ সালে বাহিনীর নতুন নামরকণ করা হয় বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশ। ব্যাটালিয়নকে ৪টি কোম্পানীতে ভাগ করা হয়। ঢাকা, খুলনা, ভাগলপুর ও গ্যাংটকে কোম্পানীগুলো স্থানান্তর করে একজন ইউরোপীয় সুবেদারের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।
ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ (১৯২০-১৯৪৬)ঃ ১৯২০ সালে কালের বিবর্তনে বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশের পুনঃ নামরকণ করা হয় ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ এবং একে ১৬টি প্লাটুনে বিভক্ত করে সীমান্ত রক্ষা এবং      অভ্যন্তরীণ নিরাপত্ত রক্ষায় নিয়োজিত করা হয়।
ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ (১৯৪৭-১৯৭১)ঃ ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর এ বাহিনীর নামরকণ করা হয় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ বা সংক্ষেপে ইপিআর। কোলকাতা মেট্রোপলিটন আর্মড পুলিশের একটি দল কতিপয় বাঙ্গালী এবং তদানিন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের এক হাজার প্রাক্তন সৈনিক এ বাহিনীতে যোগ দেয়। পরবর্তীতে আরও তিন হাজার বাঙ্গালীকে নিয়োগ করে এ বাহিনীকে পুনর্গঠিত করা হয়। দক্ষ নেতৃত্ব এবং দিক নির্দেশনার প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী থেকে অফিসার নিয়োগ করা হয়। ১৯৫৮ সালে এ বাহিনীকে প্রদান করা হয় চোরাচালান দমনের দায়িত্ব। দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ১৯৫৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১নম্বর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মেজর তোফায়েল আহম্মেদ জীবন উৎসর্গ করে তৎকালীন রাষ্ট্রীয় খেতাব নিশান-ই-হায়দার অর্জন করেছিলেন। প্লাটুন কমান্ডার শহীদ নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ আজম অর্জন করেছিলেন সিতারা-ই জরাত। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য এ বাহিনীর ১৪২জন সদস্য জাতীয় বীরত্বপূর্ণ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। যার মধ্যে মরণোত্তর বীর শ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ এবং শহীদ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ। বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৯জন, বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৪০জন এবং বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৯১জন।
বাংলাদেশ রাইফেলস্ বা বিডিআর (১৯৭২ সাল থেকে)ঃ  দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ৩রা মার্চ ইপিআর এর নতুন নামকরণ করা হয় বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস্)। রামগড়ে বাংলাদেশ রাইফেলস্ এর জন্ম উপলক্ষে একটি মনোরম স্মৃতিফলক রয়েছে। যাতে বিডিআর এর ধারাবাহিক ইতিহাস দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে বিধৃত করা হয়েছে।


No comments:

Post a Comment